Showing posts with label Bangla Articles. Show all posts
Showing posts with label Bangla Articles. Show all posts

Monday, February 5, 2018

হেদায়াত ও গোমরাহি সম্পর্কে ভুল ধারনা।

হেদায়াত ও গোমরাহি সম্পর্কে ভুল ধারনা।

হেদায়াত ও গোমরাহি নিয়ে মানুষের কিছু ভ্রান্ত ধারনা রয়েছে। এই অনুচ্ছেদে হেদায়াত ও গোমরাহি সম্পর্কে সকল ভুল ধারনা দূর করা হবে ইনশাআল্লাহ্‌।

এই অণুচ্ছেদটি নেওয়া হয়েছে আল-ফিকহুল আকবর, পঞ্চম আনুচ্ছেদ থেকে, গ্রন্থটি আনুবাদ করেছেন ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর, আধ্যাপক, আল-হাদিস বিভাগ, ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া।

আল্লাহ তা’আলা দয়া করে যাকে ইচ্ছা সুপথ প্রদর্শন করে। আর তিনি ন্যায়পরায়ণতা পূর্বক যাকে ইচ্ছা বিভ্রান্ত করে। বিভ্রান্ত করার অর্থ সাহায্য পরিত্যাগ করা। সাহায্য পরিত্যাগের ব্যাখ্যা এই যে, মহান আল্লাহ সে বান্দাকে তার সন্তুষ্টির পথে চলার তৌফীক প্রদান করেন না। বিষয়টি তার ন্যায়পরায়ণতার প্রকাশ। আনুরুপভাবে যে পাপিকে তিনি পাপ ও অবাধ্যতার কারনে পরিত্যাগ করেছেন তার পাপের কারনে শাস্তি পদানও তার ন্যায়পরায়ণতার প্রকাশ। আমাদের জন্য এই কথা বলা বৈধ নয় যে, শয়তান জবরদস্তি বা জোর করে মুমিন বান্দার ঈমান কেরে নেয়। বরং আমরা বলিঃ বান্দা যখন তার ইমান পরিত্যাগ করে, তখন শয়তান তা তার থেকে ছিনিয়ে ন্যায়।



মহান আল্লাহ কুরআনে বারবার উল্লেখ করেছেন যে, তিনি যাকে ইচ্ছা পথ প্রদর্শন করেন বা পথভ্রষ্ট করেন। যেমন আল্লাহ তা’আলা কুরআনে সূরা ইব্রাহীম, আয়াত ৪ এ বলেছেনঃ “আর আমি প্রত্যেক রাসুলকে তার জাতির ভাষাতেই পাঠিয়েছি, যাতে সে তাদের কাছে বর্ণনা দেয়; অতঃপর আল্লাহ যাকে ইচ্ছা পথভ্রষ্ট করেন এবং যাকে ইচ্ছা সঠিক পথ প্রদর্শন করেন। আর তিনি পরাক্রমশালী প্রজ্ঞাময়”।
আল্লাহ তা’আলা আরো বলেনঃ “আল্লাহ যাকে হেদায়াত করতে চান তার বক্ষ ইসলামের জন্য প্রশস্ত করে দেন। আর যাকে তিনি পথভ্রষ্ট করতে চান তার বক্ষকে সংকীর্ণ-সংকুচিত করে দেন; যেন সে আকাশে-ঊর্ধ্বে আহরন করছে। এভাবেই আল্লাহ অকল্যাণ দেন তাদের উপর যারা ঈমান আনে না।” আয়াত ১২৫, সূরা-আনআম।




পাশাপাশি কুরআনে বারবার উল্লেখ করা হয়েছে যে, ঈমান আনয়ন বা সত্য গ্রহণ মানুষের নিজের ইচ্ছাধীন কর্ম।

মহান আল্লাহ বলেনঃ “আর বল, তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে সত্য; কাজেই যে ইচ্ছা করে সে ঈমান গ্রহণ করুক এবং যে ইচ্ছা করে সে কুফরি করুক।”

অন্য আয়াতে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা বলেনঃ “নিশ্চয় এ এক উদ্দেশ্য; অতএব যে চায় সে তার রবের দিকে পথ গ্রহণ করুক।”

মানুষকে আল্লাহ স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি দিয়ে সৃষ্টি করেছে। মানুষ তার স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি দিয়ে কি করবে আল্লাহ তা জানেন। আল্লাহ ইচ্ছা করলে তার ইচ্ছা ও কর্মে বাধা দিতে পারেন বা তার ইচ্ছাকে প্রভাবিত করতে পারেন। তিনি তার কোনো বান্দার ইচ্ছা বা কর্মে সন্তুষ্ট হয়ে তাকে অতিরিক্ত তাওফিক বা কল্যাণে সহায়তা প্রদান করে। আর এই অর্থে তিনি বলেছেন- “যাকে ইচ্ছা করেন তাকে তিনি হেদায়াত করেন।” তার হেদায়াত অর্থ তার তাওফিক বা তার পক্ষ থেকে অতিরিক্ত করুনা। পক্ষান্তরে যার ইচ্ছা ও কর্মে আল্লাহ অসন্তুষ্ট হন তাকে এরুপ তাওফিক বা মঙ্গলে সহায়তা প্রদান থেকে তিনি বিরত থাকেন; বরং তাকে তার স্বাধীন ইচ্ছার উপর ছেড়ে দেন। তখন সে স্বাধীন ইচ্ছা ও প্রবিত্তির অনুসরণ করে বিপথগামী হয়। এই অর্থেই তিনি বলেছেন- “যাকে ইচ্ছা তিনি তাকে পথভ্রষ্ট করেন।” কাউকে তার ইচ্ছা ও কর্মের কারনে অতিরিক্ত তাওফিক ও করুনা থেকে বিরত থাকা ইনসাফের ব্যতিক্রম নয়। এরূপ ব্যক্তির ইচ্ছা ও কর্মের জন্য তাকে শাস্তি দেওয়াও ইনসাফের ব্যতিক্রম নয়।

আশা করি সবাই হেদায়াত ও গোমরাহি বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে বুঝতে পেরেছেন। যদি এই বিষয়ে কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে কমেন্ট করুন। ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্যে পষ্টটি শেয়ার করুন। মহান আল্লাহ তা’আলা আমাদের সকল ভুলত্রুটি ক্ষমা করে আমাদের সবাইকে হেদায়াত দান করুন। আমিন।
Share:

Tuesday, June 21, 2016

ভালোবাসাঃ আল্লাহ্‌র জন্য।


ভালোবাসাঃ আল্লাহ্‌র জন্য।


Tafsirul Quran
Tafsirul Qur'an 
যারা পরস্পরকে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার জন্যে ভালোবাসে তাদের মর্যাদা অনেক হাদীসে বর্ণিত হয়েছে। জান্নাতে তাদের উচ্চ সম্মানিত স্থানের কথা ওয়াদা করা হয়েছে এবং যেদিন সমগ্র মানব জাতিকে তাদের রবের সম্মুখে দাঁড় করানো হবে বিচারের জন্যে, সেদিন আল্লাহ তায়ালা যে সম্মান তাদেরকে দান করবেন তাও বর্ণিত হয়েছে।

হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ ৭ শ্রেণীর লোকদের মহান আল্লাহ সেদিন তাঁর সুশীতল ছায়াতলে আশ্রয় দিবেন, যেদিন তাঁর ছাড়া অন্য কোন ছায়াই থাকবে না। তাঁরা হলেনঃ

১ ন্যায়বিচারক শাসক বা নেতা
২ মহান আল্লাহর ইবাদতে মশগুল যুবক
৩ মসজিদের সাথে সম্পর্কযুক্ত হৃদয়ের অধিকারী
৪ যে দুজন লোক একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে পরস্পর বন্ধুত্ব করে এবং এ জন্যেই আবার বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়

৫ এরূপ ব্যক্তি যাকে কোন অভিজাত পরিবারের সুন্দরী নারী খারাপ কাজে আহবান করেছে, কিন্তু সে বলে দিল, আমি আল্লাহকে ভয় করি

৬ যে ব্যক্তি এতো গোপনভাবে দান-খয়রাত করে যে, তার ডান হাত কি দান করলো, বাঁ হাতেও তা জানতে পারলো না

৭ এরূপ ব্যক্তি যে নির্জনে আল্লাহর যিকির করে এবং দু’চোখের পানি ফেলে (কাঁদে)।
[বুখারী ও মুসলিম]

যে দুজন পরস্পরকে আল্লাহর জন্যে ভালোবাসে তাদের জন্যে স্পষ্টভাবে সুসংবাদ জানিয়ে দেয়া হয়েছে যে, তারা আল্লাহর আরশের ছায়াতলে আশ্রয় লাভ করবে এবং আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা তাদের উপর তাঁর অসীম রহমত ও করুণা বর্ষিত করবেন। কত বিরাট এই সম্মান ! এই সম্মানই তো যথেষ্ট যে, যারা পরস্পরকে আল্লাহর জন্যে ভালোবাসে তাদেরকে শেষ বিচারের দিন ডাকা হবে এবং বলা হবে ; “কোথায় তারা যারা একে অপরকে আমার সম্মানে ভালোবেসেছো ? আজ তাদেরকে আমি আমার ছায়াতলে আশ্রয় দান করব যখন আমার (আরশের) ছায়া ব্যতীত আর কোন ছায়া নেই” (মুসলিম) এরকম সুমহান মর্যাদা ও সমুন্নত সম্মান তাদের যোগ্য প্রাপ্য যারা কিনা আল্লাহর জন্যেই পরস্পরকে ভালোবাসে।

এই পৃথিবী যা কিনা লোভ, লালসা এবং স্বার্থপরতায় পরিপূর্ণ; সেখানে বসবাস করে কাউকে শুধুমাত্র আল্লাহর জন্যে ভালোবাসা, অন্য কোন কিছুর জন্যে নয় ; তা বেশ কঠিন নয় কি? পবিত্র ও বিশুদ্ধ হৃদয়ের অধিকারী ব্যতীত অন্য কেউ এই ভালোবাসা অর্জন করতে পারে না, যারা পরস্পরকে আল্লাহর জন্যে ভালোবাসে তাদের নিকট এই দুনিয়ার জীবন আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের মাধ্যম ব্যতীত আর কিছুই নয়। তাই এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই যে, আল্লাহ তাদেরকে সম্মান ও মর্যাদা দান করবেন অন্যদের উপরে যারা দুনিয়ার ভালোবাসায় ডুবে রয়েছে। আমরা এর প্রমাণ পাই হযরত মুয়ায রাদিয়াল্লাহু আনহু কর্তৃক বর্ণিত এই হাদীসটিতে যেখানে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন;“আল্লাহ (সুবাহানাহু ওয়া তায়ালা ) বলেন; ‘যারা আমার সম্মানে পরস্পরকে ভালোবাসে, তারা নূরের মিম্বার লাভ করবে, এবং নবীগণ ও শহীদগণও অনুরূপ ইচ্ছা করবেন” [তিরমিযি কর্তৃক হাসান সহীহ হাদীস]

যারা পরস্পরকে আল্লাহর জন্যে ভালোবাসে তাদেরকে সুমহান আল্লাহ রাব্বুল আ’লামিন তাঁর রহমত ও করুণার পাশাপাশি আরো একটি দুর্লভ অনুগ্রহ দান করবেন, যা কিনা অর্জন করা খুবই কঠিন। আর তা হল মহান প্রতিপালকের নিজের পক্ষ থেকে বান্দার প্রতি ভালোবাসা ! হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “একটি লোক অপর একটি গ্রামে তার ভাইকে দেখতে গেল। আল্লাহ তায়ালা একজন ফেরেশতাকে পাঠিয়ে দিলেন। তিনি লোকটির জন্যে রাস্তায় অপেক্ষা করতে থাকলেন। যখন লোকটি আসল, তখন ফেরেশতা তাকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তুমি কোথায় যেতে মনস্থির করেছ?’ লোকটি বলল, ‘আমি আমার এক ভাইকে দেখতে যাচ্ছি যে এই গ্রামে থাকে’। ফেরেশতা তাকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘ তুমি কি তার প্রতি কোন অনুগ্রহ করেছ(যার কারণে তুমি প্রতিদান আশা কর)?’ । সে বলল, ‘না। আমি কেবলমাত্র আল্লাহর জন্যেই তাকে ভালোবাসি।’ ফেরেশতা তাকে বললেন, ‘আমি আল্লাহর পক্ষ হতে তোমার নিকট প্রেরিত একজন দূত, তিনি(আল্লাহ) তোমাকে ভালোবাসেন যেরকম তুমি তোমার ভাইকে তাঁর জন্যে ভালোবাসো, আমি তোমাকে এটা বলার জন্যই প্রেরিত হয়েছি।” (মুসলিম)

কত অসাধারণ এই ভালোবাসা ! যা একজন মানুষকে সেই পর্যায়ে নিয়ে যায় যখন স্বয়ং আল্লাহ তাকে ভালোবাসেন এবং তার প্রতি সন্তুষ্ট থাকেন !

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শিক্ষা হতে জানা যায় যে, দুই ব্যক্তির মধ্যে সে উত্তম যে অপরকে আল্লাহর জন্যে বেশি ভালোবাসে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “এমন কোন দুই ব্যক্তি নেই, যে কিনা তার ভাইয়ের প্রতি অধিক ভালোবাসা পোষণ করে অথচ সে অপরজন অপেক্ষা উত্তম নয় “। [বুখারী, আদাব-আল-মুফরাদ]

ইসলামের শিক্ষা ভালোবাসা ছড়াতে সাহায্য করে, একটি সুস্থ সমাজ গঠনে সহায়তা করে। কেউ যদি তার মুসলিম ভাইকে ভালোবাসে তার উচিত তাকে জানিয়ে দেয়া। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন; “যদি কোন ব্যক্তি তার ভাইকে ভালোবাসে, তাকে বলতে দাও যে সে তাকে ভালোবাসে”। [আবু দাউদ ও তিরমিযি একে সহীহ বলেছেন]

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এই পবিত্র, নির্মল ভালোবাসার গুরুত্ব বুঝেছিলেন। সমাজ ও জাতি গঠনে এবং পারস্পরিক বন্ধন সুদৃঢ় করতে তা সহায়ক। তাই তিনি এমন কোন পরিস্থিতি এড়িয়ে যাননি যখন একজন মুসলিম অপর আরেকজন মুসলিমের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করতে পারে। হৃদয়ের পংকিলতা দূর করতে এবং মুসলিম উম্মাহর মধ্যে বন্ধন দৃঢ় করতে এই পবিত্রতা ছড়িয়ে দেয়া উচিত সকল হৃদয়ে।

হযরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, একদা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাথে একজন লোক অবস্থান করছিলেন, এমতাবস্থায় অন্য এক ব্যক্তি সেদিক দিয়ে যাচ্ছিল। প্রথম ব্যক্তি বললেন, “ইয়া রাসুলুল্লাহ! আমি এই লোকটিকে সত্যিই ভালোবাসি।” রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে জিজ্ঞেস করলেন, “তুমি কি তাকে তা জানিয়েছো?” লোকটি বলল, না। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে বললেন, “তাকে বল”। প্রথম লোকটি তাকে দৌড়ে ধরে ফেলল এবং বলল, “সত্যিই আমি তোমাকে আল্লাহর জন্যে ভালোবাসি”। লোকটি উত্তর করল, ” আল্লাহও তোমাকে ভালোবাসুন যে আমাকে তাঁর জন্যে ভালোবাসে”। [আবু দাউদ, সহীহ]

হযরত মুয়ায রাদিয়াল্লাহু আনহু এই পবিত্র ভালোবাসা ছড়িয়ে দিতেন মুসলিমদের মাঝে, এবং তিনি সেই বিরাট পুরষ্কার সম্পর্কে তাদেরকে বলতেন যা আল্লাহ তায়ালা প্রস্তুত করে রেখেছেন যারা আল্লাহর জন্যে পরস্পরকে ভালোবাসে, যারা আল্লাহর জন্যে পরস্পরকে ভালোবাসে তাদেরকে আল্লাহও ভালোবাসেন।

ইমাম মালিক রাহিমাহুল্লাহ তাঁর আল-মুয়াত্তায় একটি সহীহ ইসনাদ বর্ণনা করেছেন, আবু ইদরিস আল-খুলানি থেকে। তিনি বলেন, “আমি দামেস্কের মসজিদে প্রবেশ করলাম, সেখানে আমি অল্প বয়স্ক একজন লোককে দেখলাম যার হাসি ছিল ঝলমলে উজ্জ্বল, এবং আমি লোকদের দেখলাম তাকে কেন্দ্র করে ভিড় করতে। যখন কোন একটি বিষয়ে তাদের মতানৈক্য হল, তারা যুবক লোকটির কাছে সে বিষয়টি উপস্থাপন করল এবং তার মতামত মেনে নিল। আমি জানতে চাইলাম, এই লোকটি কে ছিল , তারা আমাকে বলল, ‘ইনি মুয়ায ইবন যাবাল (রাদিয়াল্লাহু আনহু)’। পরদিন খুব সকাল সকাল আমি মসজিদে গিয়ে হাজির হলাম কিন্তু গিয়ে দেখলাম তিনি তারও আগে সেখানে উপস্থিত। তিনি নামাযরত ছিলেন, তাই আমি শেষ করা পর্যন্ত অপেক্ষা করলাম, এরপর আমি তার কাছে গেলাম, হাসি বিনিময় করলাম এবং বললাম, “আল্লাহর জন্যে আমি আপনাকে ভালোবাসি”। তিনি জানতে চাইলেন, “আল্লাহর জন্যে?” আমি বললাম, “আল্লাহর জন্যে”। তিনি আবার প্রশ্ন করলেন, “আল্লাহর জন্যে”? এবং আমি বললাম, “আল্লাহর জন্যে”। একারণে তিনি আমাকে আমার জামা ধরে টেনে তার কাছে নিলেন এবং বললেন, “তোমার জন্যে সুসংবাদ । আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, “আল্লাহ সর্বশক্তিমান বলেনঃ ‘আমার ভালোবাসা তাদের জন্য বরাদ্দকৃত যারা একে অপরকে ভালোবাসে আমার জন্যে, যারা একে অপরকে দেখতে যায় আমার জন্যে এবং যারা একে অন্যের প্রতি খরচ করে আমার জন্যে”।
Share:

Sunday, June 19, 2016

প্রত্যেকেই পরোক্ষভাবে হলেও আল্লাহ্‌র আইন মানে

প্রত্যেকেই পরোক্ষভাবে হলেও আল্লাহ্‌র আইন মানে

আমরা মুসলিম জাতী,আমি মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছি, আমার ধর্ম ইসলাম, আমি গর্বিত যে আমি একজন মুসলিম। আনেক অমুসলিম আছে যারা দুনিয়াতে শুধু ইসলামের শত্রু হয়ে ইসলামকে ধ্বংস করতে এসেছে, তাঁরা ইসলামের কোন কিছু মানতেই চাই না। কিন্তু আমি আজকে দেখাব তাঁরা ইসলামকে মানতে না চাইলেও পরোক্ষভাবে ইসলামকে মেনেই দুনিয়াতে টিকে আছে। ইসলামকে না মেনে কোন মুসলিম, কাফের, ইহুদী, নাস্তিক, কেউ-ই দুনিয়াতে টিকতে পারবেনা। একটা বিষয় আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।

একজন মুসলমানের পশ্চিম, একজন কাফেরের পশ্চিম, একজন নাস্তিকের পশ্চিম, বাংলাদেশের পশ্চিম, ইন্ডিয়ার পশ্চিম বা অন্য যে কোন দেশের ই হক না কেন সবারই পশ্চিম দিক (West Side) আছে। এই পশ্চিম কীভাবে নির্ণয় করা হয়েছে তা সবারই জানা। পৃথিবীর কেন্দ্রই হচ্ছে সকলের পশ্চিম, আর এই পৃথিবীর কেন্দ্র কোথাই বা কোনটা জানেন? পবিত্র মক্কা শরীফের ক্বাবা ঘর! সকল ধর্মের মানুষই কিন্তু পরোক্ষভাবে হলেও ক্বাবা ঘরকে-ই মেনে নিয়েছে। পৃথিবীতে সকল মসজিদই মহান আল্লাহ্‌র ঘর, ক্বাবা ঘর মহান আল্লাহ্‌র ঘর আর সেই দিক থেকে পৃথিবীর সবাই পরোক্ষভাবে হলেও আল্লাহর আইনকে মেনেনিতে বাধ্য হয়েছে, পরোক্ষভাবে হোক বা প্রত্যক্ষভাবে।
Share:

Friday, June 17, 2016

সপ্তস্তর বিশিষ্ট আসমান

সপ্তস্তর বিশিষ্ট আসমান





তিনিই সে সত্তা (আল্লাহ) যিনি সৃষ্টি করেছেন তোমাদের জন্যে যা
কিছু রয়েছে জমিনে, অতঃপর তিনি মনসংযোগ করেছেন আকাশের
প্রতি। বস্তুত তিনি তৈরি করেছেন সাত আসমান। আর তিনি
সর্ববিষয়ে অবহিত। (বাকারা, ০২ : ২৯)

আর আমি তোমাদের ওপর সৃষ্টি করেছি সপ্তপথ। (মুমিনূন, ২৩ :১৭)

আর আমি নির্মাণ করেছি তোমাদের ওপর মজবুত সপ্ত আকাশ। (নাবা, ৭৮ : ১২)

এই আয়াতগুলি শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে রহস্য হয়েই থেকে গেছে।
এমনকি এই বিজ্ঞানের যুগের মানুষদের কাছেও। সাম্প্রতিক সময়ে একজন
তুর্কি মহাকাশ বিজ্ঞানী ডক্টর হালুক নূর বাকি মহাকাশ বিজ্ঞানের সাম্প্রতিক
গবেষণার ভিত্তিতে এই আয়াতগুলির ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তিনি দেখিয়েছেন,
যে মহাশূন্য আমাদের পৃথিবীকে বেষ্টন করে আছে তা নিমড়বলিখিত সাতটি
সমকেন্দ্রিক চৌম্বক স্তরে গঠিত।

১. মহাশূন্যের যে ক্ষেত্র সৌরজগত দ্বারা গঠিত তা প্রথম আসমানের
প্রতিনিধিত্ব করে।

২. সম্প্রতি ‘মিল্কিওয়ে’ বা আকাশগঙ্গার চারপাশে একটি চৌম্বক
ক্ষেত্র আবিষ্কৃত হয়েছে। আমাদের ছায়াপথের এই বিস্তৃত ক্ষেত্রটি
দ্বিতীয় আসমানের প্রতিনিধিত্ব করে।

৩. ছায়াপথসমূহের ‘Local Cluster’ মহাকাশীয় ক্ষেত্র তৃতীয়
আসমানের প্রতিনিধিত্ব করে।

৪. ছায়াপথসমূহের সমন্বয়ে গঠিত মহাবিশ্বের কেন্দ্রীয় চৌম্বক ক্ষেত্র
চতুর্থ আসমানের প্রতিনিধিত্ব করে।

৫. অতি দূর থেকে আগত আলোকতরঙ্গের উৎসসমূহের
প্রতিনিধিত্বকারী মহাজাগতিক বলয় পঞ্চম আসমানের প্রতিনিধিত্ব
করে।

৬. মহাবিশ্বের প্রসারমান ক্ষেত্র ষষ্ঠ আসমানের প্রতিনিধিত্ব করে।

৭. মহাবিশ্বের প্রান্তহীন অসীমত্বের নির্দেশক সর্ববহিরস্থ ক্ষেত্র সপ্তম
আসমানের প্রতিনিধিত্ব করে।

আসমানের এই স্তরসমূহ অকল্পনীয় স্থান জুড়ে আছে। প্রথম আসমান স্তরের
পুরুত্ব আনুমানিক ৬.৫ ট্রিলিয়ন কিলোমিটার। দ্বিতীয় স্তর তথা আমাদের
ছায়াপথের ব্যাস হল ১৩০ হাজার আলোকবর্ষ। তৃতীয় স্তরের বিস্তার ২
মিলিয়ন আলোকবর্ষ। চতুর্থ স্তরের ব্যাস ১০০ মিলিয়ন আলোকবর্ষ। পঞ্চম
স্তরটি ১ বিলিয়ন আলোকবর্ষের দূরত্বে। ষষ্ঠ স্তরটি অবস্থিত ২০ বিলিয়ন
আলোকবর্ষের দূরত্বে। একথা বলা বাহুল্য যে, সপ্তম স্তরটি বিস্তৃত হয়ে
আছে অসীম দূরত্ব পর্যন্ত। সকল প্রশংসা ও কৃতজ্ঞতা সেই আল্লাহ
তাআলার জন্যে যিনি এই সুবৃহৎ ও অসীম মহাবিশ্বের একমাত্র সৃষ্টিকর্তা ও
পালনকর্তা। এই হল সেই সপ্তস্তর আসমান যার ঘোষণা দিয়েছে কুরআন
মাজিদ আজ থেকে চৌদ্দশ বছর পূবে।
Share:

Wednesday, June 15, 2016

রমযানে জীবনের পূর্বের গোনাসমূহ মাফ করুন।

রমযানে জীবনের পূর্বের গোনাসমূহ মাফ করুন। 





আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণীত, নবী কারিম (সঃ) বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি রমযানে ঈমানের সাথে সাওয়াব লাভের আশায় কিয়ামে রমাজান বা তারাবির সালাত আদায় করবে তার পূর্ববর্তী গোনাসমূহ মাফ করে দেওয়া হবে।

সহিহ বুখারি-১৮৮২
Share: