হেদায়াত ও গোমরাহি সম্পর্কে ভুল ধারনা।
হেদায়াত ও গোমরাহি নিয়ে মানুষের কিছু ভ্রান্ত ধারনা রয়েছে। এই অনুচ্ছেদে হেদায়াত ও গোমরাহি সম্পর্কে সকল ভুল ধারনা দূর করা হবে ইনশাআল্লাহ্।এই অণুচ্ছেদটি নেওয়া হয়েছে আল-ফিকহুল আকবর, পঞ্চম আনুচ্ছেদ থেকে, গ্রন্থটি আনুবাদ করেছেন ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর, আধ্যাপক, আল-হাদিস বিভাগ, ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া।
মহান আল্লাহ কুরআনে বারবার উল্লেখ করেছেন যে, তিনি যাকে ইচ্ছা পথ প্রদর্শন করেন বা পথভ্রষ্ট করেন। যেমন আল্লাহ তা’আলা কুরআনে সূরা ইব্রাহীম, আয়াত ৪ এ বলেছেনঃ “আর আমি প্রত্যেক রাসুলকে তার জাতির ভাষাতেই পাঠিয়েছি, যাতে সে তাদের কাছে বর্ণনা দেয়; অতঃপর আল্লাহ যাকে ইচ্ছা পথভ্রষ্ট করেন এবং যাকে ইচ্ছা সঠিক পথ প্রদর্শন করেন। আর তিনি পরাক্রমশালী প্রজ্ঞাময়”।
আল্লাহ তা’আলা আরো বলেনঃ “আল্লাহ যাকে হেদায়াত করতে চান তার বক্ষ ইসলামের জন্য প্রশস্ত করে দেন। আর যাকে তিনি পথভ্রষ্ট করতে চান তার বক্ষকে সংকীর্ণ-সংকুচিত করে দেন; যেন সে আকাশে-ঊর্ধ্বে আহরন করছে। এভাবেই আল্লাহ অকল্যাণ দেন তাদের উপর যারা ঈমান আনে না।” আয়াত ১২৫, সূরা-আনআম।
মহান আল্লাহ বলেনঃ “আর বল, তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে সত্য; কাজেই যে ইচ্ছা করে সে ঈমান গ্রহণ করুক এবং যে ইচ্ছা করে সে কুফরি করুক।”
অন্য আয়াতে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা বলেনঃ “নিশ্চয় এ এক উদ্দেশ্য; অতএব যে চায় সে তার রবের দিকে পথ গ্রহণ করুক।”
মানুষকে আল্লাহ স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি দিয়ে সৃষ্টি করেছে। মানুষ তার স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি দিয়ে কি করবে আল্লাহ তা জানেন। আল্লাহ ইচ্ছা করলে তার ইচ্ছা ও কর্মে বাধা দিতে পারেন বা তার ইচ্ছাকে প্রভাবিত করতে পারেন। তিনি তার কোনো বান্দার ইচ্ছা বা কর্মে সন্তুষ্ট হয়ে তাকে অতিরিক্ত তাওফিক বা কল্যাণে সহায়তা প্রদান করে। আর এই অর্থে তিনি বলেছেন- “যাকে ইচ্ছা করেন তাকে তিনি হেদায়াত করেন।” তার হেদায়াত অর্থ তার তাওফিক বা তার পক্ষ থেকে অতিরিক্ত করুনা। পক্ষান্তরে যার ইচ্ছা ও কর্মে আল্লাহ অসন্তুষ্ট হন তাকে এরুপ তাওফিক বা মঙ্গলে সহায়তা প্রদান থেকে তিনি বিরত থাকেন; বরং তাকে তার স্বাধীন ইচ্ছার উপর ছেড়ে দেন। তখন সে স্বাধীন ইচ্ছা ও প্রবিত্তির অনুসরণ করে বিপথগামী হয়। এই অর্থেই তিনি বলেছেন- “যাকে ইচ্ছা তিনি তাকে পথভ্রষ্ট করেন।” কাউকে তার ইচ্ছা ও কর্মের কারনে অতিরিক্ত তাওফিক ও করুনা থেকে বিরত থাকা ইনসাফের ব্যতিক্রম নয়। এরূপ ব্যক্তির ইচ্ছা ও কর্মের জন্য তাকে শাস্তি দেওয়াও ইনসাফের ব্যতিক্রম নয়।
আশা করি সবাই হেদায়াত ও গোমরাহি বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে বুঝতে পেরেছেন। যদি এই বিষয়ে কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে কমেন্ট করুন। ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্যে পষ্টটি শেয়ার করুন। মহান আল্লাহ তা’আলা আমাদের সকল ভুলত্রুটি ক্ষমা করে আমাদের সবাইকে হেদায়াত দান করুন। আমিন।