Sunday, December 30, 2018

আল্লাহর সুন্দর নাম সমুহ | আল ওয়াহিদ এবং আল আহাদ

আল ওয়াহিদ এবং আল আহাদ নামের ব্যাখ্যা 

মহান আল্লাহ এক ও অদ্বিতীয়। অনন্তকাল ধরে তিনি তাঁর সত্বা, গুণাগুণ, কার্যাবলী, রুবুবিয়াত, উলুহিয়াত সব কিছুতেই অদ্বিতীয় ও অনন্য। তিনি এককভাবে সকল ইবাদত-বন্দেগীর হকদার।

কুরআনে আল ওয়াহিদ নামটি ২২ বার এবং আল আহাদ নামটি ১ বার উল্লেখিত হয়েছে।

আল্লাহ বলেন,
 

وَهُوَ الْوَاحِدُ الْقَهَّارُ

এবং তিনি একক, পরাক্রমশালী ।” (সূরা রাদ: ১৬)

قُلْ هُوَ اللَّـهُ أَحَدٌ

বলুন, তিনি আল্লাহ এক ।” (সূরা ইখলাস: ১)

Share:

আল্লাহর সুন্দর নাম সমুহ | আর রব্ব


রব্ব নামের ব্যাখ্যা

মহান আল্লাহ সমগ্র বিশ্বচরাচরের স্রষ্টা,অধিপতি, পরিচালক এবং প্রতিপালক। তিনি সৃষ্টি জগতকে অসংখ্য নিয়ামত সহকারে প্রতিপালন করেন আর তার প্রিয়ভাজনদেরকে এমনভাবে প্রতিপালন করেন যেন তাদের অন্তরগুলো সঠিক পথে প্রতিষ্ঠিত থাকে।

কুরআনে এ নামটি ৯০০ বার উল্লেখিত হয়েছে।

যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন,  

الْحَمْدُ لِلَّـهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ


যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহ তায়ালার যিনি সকল সৃষ্টি জগতের পালনকর্তা।” (সূরা ফাতিহা: ২)

Share:

আল্লাহর সুন্দর নাম সমুহ | আল্লাহ


আল্লাহ নামের ব্যাখ্যা

আল্লাহ শব্দের অর্থ মা’বুদ বা উপাস্য। তিনি সেই মহান আল্লাহ যার কাছে পৃথিবীর সকল সৃষ্টিলোক তাদের সকল অভাব অনটন ও বিপদ আপদে পরম ভালোবাসা, ভয়ভীতি ও বিনম্র ভক্তি শ্রদ্ধা সহকারে ছুটে যায়।

এই নামের মধ্যে তার সকল সুন্দর নাম ও গুণাবলির সমন্বয় ঘটেছে। 

·         কুরআনে এই নামটি মোট ২৭১৪ বার উল্লেখিত হয়েছে। 

·         যেমন আল্লাহ বলেনঃ 

إِنَّنِي أَنَا اللَّهُ لَا إِلَٰهَ إِلَّا أَنَا فَاعْبُدْنِي وَأَقِمِ الصَّلَاةَ لِذِكْرِي

  আমিই আল্লাহ। আমি ব্যতিত কোন উপাস্য নেয়। এতএব, আমার এবাদত কর এবং আমার স্মরণার্থে সালাত কায়েম কর।“ (সূরা ত্বাহাঃ ১৪)

Share:

Monday, February 5, 2018

হেদায়াত ও গোমরাহি সম্পর্কে ভুল ধারনা।

হেদায়াত ও গোমরাহি সম্পর্কে ভুল ধারনা।

হেদায়াত ও গোমরাহি নিয়ে মানুষের কিছু ভ্রান্ত ধারনা রয়েছে। এই অনুচ্ছেদে হেদায়াত ও গোমরাহি সম্পর্কে সকল ভুল ধারনা দূর করা হবে ইনশাআল্লাহ্‌।

এই অণুচ্ছেদটি নেওয়া হয়েছে আল-ফিকহুল আকবর, পঞ্চম আনুচ্ছেদ থেকে, গ্রন্থটি আনুবাদ করেছেন ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর, আধ্যাপক, আল-হাদিস বিভাগ, ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া।

আল্লাহ তা’আলা দয়া করে যাকে ইচ্ছা সুপথ প্রদর্শন করে। আর তিনি ন্যায়পরায়ণতা পূর্বক যাকে ইচ্ছা বিভ্রান্ত করে। বিভ্রান্ত করার অর্থ সাহায্য পরিত্যাগ করা। সাহায্য পরিত্যাগের ব্যাখ্যা এই যে, মহান আল্লাহ সে বান্দাকে তার সন্তুষ্টির পথে চলার তৌফীক প্রদান করেন না। বিষয়টি তার ন্যায়পরায়ণতার প্রকাশ। আনুরুপভাবে যে পাপিকে তিনি পাপ ও অবাধ্যতার কারনে পরিত্যাগ করেছেন তার পাপের কারনে শাস্তি পদানও তার ন্যায়পরায়ণতার প্রকাশ। আমাদের জন্য এই কথা বলা বৈধ নয় যে, শয়তান জবরদস্তি বা জোর করে মুমিন বান্দার ঈমান কেরে নেয়। বরং আমরা বলিঃ বান্দা যখন তার ইমান পরিত্যাগ করে, তখন শয়তান তা তার থেকে ছিনিয়ে ন্যায়।



মহান আল্লাহ কুরআনে বারবার উল্লেখ করেছেন যে, তিনি যাকে ইচ্ছা পথ প্রদর্শন করেন বা পথভ্রষ্ট করেন। যেমন আল্লাহ তা’আলা কুরআনে সূরা ইব্রাহীম, আয়াত ৪ এ বলেছেনঃ “আর আমি প্রত্যেক রাসুলকে তার জাতির ভাষাতেই পাঠিয়েছি, যাতে সে তাদের কাছে বর্ণনা দেয়; অতঃপর আল্লাহ যাকে ইচ্ছা পথভ্রষ্ট করেন এবং যাকে ইচ্ছা সঠিক পথ প্রদর্শন করেন। আর তিনি পরাক্রমশালী প্রজ্ঞাময়”।
আল্লাহ তা’আলা আরো বলেনঃ “আল্লাহ যাকে হেদায়াত করতে চান তার বক্ষ ইসলামের জন্য প্রশস্ত করে দেন। আর যাকে তিনি পথভ্রষ্ট করতে চান তার বক্ষকে সংকীর্ণ-সংকুচিত করে দেন; যেন সে আকাশে-ঊর্ধ্বে আহরন করছে। এভাবেই আল্লাহ অকল্যাণ দেন তাদের উপর যারা ঈমান আনে না।” আয়াত ১২৫, সূরা-আনআম।




পাশাপাশি কুরআনে বারবার উল্লেখ করা হয়েছে যে, ঈমান আনয়ন বা সত্য গ্রহণ মানুষের নিজের ইচ্ছাধীন কর্ম।

মহান আল্লাহ বলেনঃ “আর বল, তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে সত্য; কাজেই যে ইচ্ছা করে সে ঈমান গ্রহণ করুক এবং যে ইচ্ছা করে সে কুফরি করুক।”

অন্য আয়াতে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা বলেনঃ “নিশ্চয় এ এক উদ্দেশ্য; অতএব যে চায় সে তার রবের দিকে পথ গ্রহণ করুক।”

মানুষকে আল্লাহ স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি দিয়ে সৃষ্টি করেছে। মানুষ তার স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি দিয়ে কি করবে আল্লাহ তা জানেন। আল্লাহ ইচ্ছা করলে তার ইচ্ছা ও কর্মে বাধা দিতে পারেন বা তার ইচ্ছাকে প্রভাবিত করতে পারেন। তিনি তার কোনো বান্দার ইচ্ছা বা কর্মে সন্তুষ্ট হয়ে তাকে অতিরিক্ত তাওফিক বা কল্যাণে সহায়তা প্রদান করে। আর এই অর্থে তিনি বলেছেন- “যাকে ইচ্ছা করেন তাকে তিনি হেদায়াত করেন।” তার হেদায়াত অর্থ তার তাওফিক বা তার পক্ষ থেকে অতিরিক্ত করুনা। পক্ষান্তরে যার ইচ্ছা ও কর্মে আল্লাহ অসন্তুষ্ট হন তাকে এরুপ তাওফিক বা মঙ্গলে সহায়তা প্রদান থেকে তিনি বিরত থাকেন; বরং তাকে তার স্বাধীন ইচ্ছার উপর ছেড়ে দেন। তখন সে স্বাধীন ইচ্ছা ও প্রবিত্তির অনুসরণ করে বিপথগামী হয়। এই অর্থেই তিনি বলেছেন- “যাকে ইচ্ছা তিনি তাকে পথভ্রষ্ট করেন।” কাউকে তার ইচ্ছা ও কর্মের কারনে অতিরিক্ত তাওফিক ও করুনা থেকে বিরত থাকা ইনসাফের ব্যতিক্রম নয়। এরূপ ব্যক্তির ইচ্ছা ও কর্মের জন্য তাকে শাস্তি দেওয়াও ইনসাফের ব্যতিক্রম নয়।

আশা করি সবাই হেদায়াত ও গোমরাহি বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে বুঝতে পেরেছেন। যদি এই বিষয়ে কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে কমেন্ট করুন। ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্যে পষ্টটি শেয়ার করুন। মহান আল্লাহ তা’আলা আমাদের সকল ভুলত্রুটি ক্ষমা করে আমাদের সবাইকে হেদায়াত দান করুন। আমিন।
Share:

Wednesday, January 31, 2018

সেজদাহে দোয়া করা যাবে কি না বা করা গেলেও বাংলাই করা যাবে কি না ?

সেজদাহে দোয়া করা যাবে কি না বা করা গেলেও বাংলাই করা যাবে কি না ?




উত্তরঃ রাসুলুল্লাহ (সঃ) এর শেষ ওয়াছিওত- রবিউল আউয়াল মাসের ১২ তারিখ, সোমবার দিন সাহাবিরা ফজর সালাত আদায় করবেন তখন সাহাবিরা দেখলেন রাসুলুল্লাহ (সঃ) একটু সুস্থ আনুভব করছেন (অসুস্থ ছিলেন)। সাহাবিরা রাসুল (সঃ) দেখে এগিয়ে আসতে চাইলে রাসুলুল্লাহ (সঃ) দরজার চৌকাঠে দাঁড়ানো অবস্থায় ইশারা করলেন তোমরা থাকো। রাসুলুল্লাহ (সঃ) বললেন-“রুকুতে তোমরা রবের তাযীম প্রকাশ করবে, যখন সেজদাহ করবে তখন বেশি বেশি দোয়া করবে”। কাজেই সেজদায় দোয়া কবুল হওয়ার সম্ভাবনা সব থেকে বেশি, তাই আমরা সিজদাহে বেশি বেশি দোয়া করবো, তবে আমাদের চাওয়ার ভাষাটা হবে আল্লাহ্‌র কাছে চাওয়ার ভাষা, বিনয়ী ভাষা। রাসুলুল্লাহ (সঃ) এর শেখানো দোয়াগুলো করলে ভালো হয় এছাড়াও আমরা যেকোনো কিছু চায়তে পারি, দুনিয়া হক, আখেরাত হক যেকোনো কিছু। আমাদের দেশে যে ধরনের ফিকাহ কিতাবগুলো পরানো হয় বা আমাদের দেশের আলেম ঊলামাদের মতে মাতৃভাষায় দোয়া করা মাখরু, কেঁউ কেঁউ বলেছে মাখরু তাঞ্জি (অনুচিত), বেশি মাখরু তাহরিম। এটা হল আমাদের দেশের হানাফি মাজহাবি ফকিহগনের মত তবে হানাফি মাজহাবি ফকিররা যারা মিশর সাঊদি আরব, মিশর, তুরস্ক, সিরিয়া আছেন তারা বলেন মাতৃভাষায় সেজদাহে দোয়া করা কোন দোষ হতে পারে না। বরং দোয়া তো বান্দা আল্লাহ্‌র কাছে নিজের ভাষাতেই করবেন। এজন্য সেজদাহে দোয়া কোরআনের ভাষাতেই করবো যদি কেঁউ না পারে তাহলে নফল সালাতে তাহাজ্জুদ সালাতে মাতৃভাষায় দোয়া করতে পারেন বিষেশ করে কোরআন বা হাদিসে যে দোয়াগুলো এর অর্থগুলো মনের আবেগে বলতে পারেন।

ড. খন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর

Share: